আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ৭৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন। হামলার লক্ষ্যবস্তু পাঁচতলা ভবনটি ছিল গাজার বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয়স্থল। কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক হুসাম আবু সাফিয়া জানান, আহতদের অনেককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আহতদের জরুরি চিকিৎসা দিতে সার্জনদের দ্রুত হাসপাতালে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবু সাফিয়া বলেন, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে অনেক আহত ব্যক্তি মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছেন। তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, গাজায় চলমান গণহত্যা রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, গাজার আহতদের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল পাঠানো জরুরি। গাজার উত্তরাঞ্চলে চিকিৎসা সেবার মূল কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে কামাল আদওয়ান হাসপাতাল। কিছুদিন আগে ইসরায়েলি বাহিনী সেখানকার বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে আটক করে। বর্তমানে মাত্র তিনজন চিকিৎসক সেখানে সেবা প্রদান করছেন, যা গুরুতর সংকট তৈরি করেছে।
মাঠপর্যায়ের হাসপাতালগুলোর পরিচালক মারওয়ার আল হামস বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বড় ধরনের সহায়তা প্রয়োজন। বিশেষ করে সার্জন এবং অ্যাম্বুলেন্স জরুরি ভিত্তিতে পাঠাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।এদিকে, গতকাল ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেট একটি বিতর্কিত বিল পাস করেছে, যা জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর কার্যক্রম ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নিষিদ্ধ করে। গাজায় জীবন রক্ষাকারী এই সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ হলে পরিস্থিতি আরও করুণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
ইসরায়েলের বহু পশ্চিমা মিত্রও মনে করছে, এই সিদ্ধান্ত গাজার মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করবে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালালে ১,১৩৯ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ জিম্মি হয়। এর জবাবে ইসরায়েল অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে, যেখানে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৪৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সূত্র: প্রথম আলো