এইচ এম সাগরঃ
শিশুরা যাতে সামাজিক মিডিয়া এবং ভিডিও গেমে বেশি সময় না কাটায় সে বিষয়ে অভিভাবকদেরই সচেতন হতে হবে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে অল্পবয়সে ভিডিও গেমের প্রতি প্রবল আসক্তি তাদের হার্টের ক্ষতি করতে পারে।
এই হার্টের ক্ষতি পরবর্তী জীবনে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। নতুন গবেষণায় ৭৬৬জন বৃটিশ তরুণকে ১৩ বছর ধরে ট্র্যাক করা হয়েছিল। ৭ দিনের জন্য একটি অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকার সহ তাদের স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছিলো। যেটি ভিডিও গেম খেলতে বসার সময় ট্র্যাক করবে। ১১ বছর বয়সী শিশুদের মূল্যায়ন করা হয়েছিল যে তারা প্রতিদিন কতটা সময় নিষ্ক্রিয় থাকছে।
এই মূল্যায়ন পুনরাবৃত্তি হয়েছিল যখন তাদের বয়স ছিল ১৫ এবং পরে তারাই যখন ২৪ বছরে পা দিয়েছিলো। গবেষকরা তরুণদের আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানও করেছেন। স্ক্যানগুলি হৃৎপিণ্ডের বাম ভেন্ট্রিকলের ওজন নির্ণয় করতে ব্যবহৃত হয়েছিল। বাম ভেন্ট্রিকল বর্ধিত হলে সেটি প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে। শিশু এবং তরুণদের ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের অকাল ক্ষতি ডেকে আনে।
আমস্টারডামের ESC কংগ্রেসে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, ১১বছর বয়সীরা ৬ ঘন্টা এবং ২৪ বছর বয়সীরা টানা ৯ ঘন্টা ভিডিও গেমের পেছনে সময় ব্যয় করেছে। গবেষকরা দেখেছেন যে ১১ থেকে ২৪ বছর বয়সের মধ্যে প্রতি এক মিনিটের সময়ের বৃদ্ধিতে বাম ভেন্ট্রিকুলার ভরের ০.০০৮ গ্রাম বৃদ্ধি হয়েছে। ইস্টার্ন ফিনল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যয়নের লেখক ডঃ অ্যান্ড্রু আগবাজে বলেন, "তরুণরা যত বেশি সময় স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকে তাদের তত বেশি হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি।
তাই শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের তাদের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ভিডিও গেমের আসক্তি থেকে সরিয়ে আনা দরকার। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, নিষ্ক্রিয় সময় জমে থাকা শরীরের ওজন এবং রক্তচাপ হার্টের ক্ষতির সাথে সম্পর্কিত। গবেষকরা বলছেন, অভিভাবকদের উচিত শিশুদের হাঁটানোর জন্য নিয়ে যাওয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া ও ভিডিও গেম থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখা।
বৃটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের সহযোগী মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডাঃ সোনিয়া বাবু নারায়ণ বলেছেন: "এই সমীক্ষাটি থেকে বোঝা যায় যে শিশুরা বাইরে থেকে সুস্থ থাকলেও আদপে এই আসক্তি চুপিসারে তাদের হার্টের ক্ষতি করে যাচ্ছে। যা কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। শুধু তাই নয় শিশুদের চলাফেরার করার ক্ষমতার ওপর এটি প্রভাব বিস্তার করে। তাই ভিডিও গেমে অলস সময় কাটানোর পরিবর্তে অভিভাবকদের উচিত শিশুদের সক্রিয় রাখা। "এনএইচএসের পরামর্শ হল যে ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশুদের লক্ষ্য হওয়া উচিত সপ্তাহ জুড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০ মিনিটের শারীরিক কার্যকলাপ করা। সূত্র : নটিংহাম পোস্ট।