আখরোট ফলটিকে অনেকেই চেনেন না। এক ধরনের বাদাম জাতীয় ফল বলতে পারেন একে। বিভিন্ন ড্রাই ফুডের সঙ্গে এই ফল খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকের। কেউ কেউ আবার সকালে খালি পেটে এটি খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, সকালে খালি পেটে আখরোট খেলে শরীরের কী কী পরিবর্তন ঘটে?
আখরোট ফলটি দেখতে মূলত গোলাকার। এর ভেতরে থাকে একটি বীজ। সেটিই মূলত খাওয়ার উপযুক্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত আখরোট খাওয়ার অভ্যাসে আপনি এই ফলটি থেকে পাবেন প্রোটিন, স্নেহ পদার্থ, ফাইবার, অ্যামিনো অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি সালাদে আখরোট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়া দেশ-বিদেশের নামিদামি খাবারেও এর ব্যবহার রয়েছে। এটি খাবারে স্বাদকে অনেক বেশি বাড়িয়ে তুলতে পারে।
তবে শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য নয়, স্বাস্থ্যের যত্ন নিতেও বেশ উপকারী এই আখরোট। এতে থাকা পুষ্টিগুণ শরীরকে নানাধরনের রোগের সঙ্গে লড়াই করার জন্য সক্ষম করে তোলে।
কিন্তু সকালে খালি পেটে আখরোট খাওয়াটা কি ঠিক? এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকি দেয়। তারা হয়তো জানেন না, আখরোটের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।
পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, সকালে খালিপেটে নিয়মিত আখরোট খাওয়ার অভ্যাস ক্যানসার, হার্টের অসুখ, স্নায়ুগত সমস্যা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণসহ নানা রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
তাদের দীর্ঘদিনের গবেষণাটি জার্নাল অব নিউট্রিশনে সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। যাতে গবেষকরা দাবি করেছে, আখরোট একই সঙ্গে হৃদযন্ত্র এবং মস্তিষ্ক উভয়েরই সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে। তাই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো রোগের হাত থেকে বাঁচতে ডায়েটে এ খাবারটিকে রাখতে পারেন।
এছাড়া আখরোটে থাকা ওমেগা ৩, ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই’র মতো উপাদানগুলো ত্বক ও চুলের যত্নে দারুণ কার্যকরী। যাদের ঘুম হয় না এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে না, নিয়মিত আখরোট খাওয়ার অভ্যাসে এ সমস্যা থেকে তারা মুক্তি পাবেন। হাড় ও দাঁতের যত্নেও দারুণ কাজ করে এ আখরোট।
পুষ্টিবিদরা বলছে, সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পেতে এবং হজম শক্তি বাড়াতে আখরোটকে পানিতে ভিজিয়ে সকালে খাওয়া ভালো। তবে পানির পরিবর্তে দুধ কিংবা মধুর সঙ্গেও সকালে আখরোট খাওয়া যেতে পারে।
একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের নিয়মিত ৫টি আখরোট খাওয়াকেই যথেষ্ট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রতিদিন ৫ টির বেশি আখরোট খাবেন না। কারণ দিনে ৫টির বেশি আখরোট খাওয়ার অভ্যাস শরীরে উপকারী নয়, বরং ক্ষতিকর বলেই অভিমত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস