পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছার ঐতিহ্যবাহী লস্কর করুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচন স্থগিত করায় বিপাকে পড়েছেন প্রার্থী ও অভিভাবকরা। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর ঠিক নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে অর্থাৎ ভোটের আগের দিন সন্ধ্যায় নির্বাচন স্থগিত এর সিদ্ধান্ত নেন সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার ও ইউআরসি ইনস্ট্রাক্টর ঈমান উদ্দিন। বিনা নোটিশে প্রিজাইডিং অফিসারের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে অভিভাবক ও প্রার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ভোট বন্ধ করায় জনমনে নানান প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এর ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উপর নৈতিবাচক ধারণা তৈরী সহ শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকেই । জানাযায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকালীন নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন স্কুল কমিটির নির্বাচন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা কে অনেকটাই উপেক্ষা করে লস্কর করুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য পদের নির্বাচনী আয়োজন করেন প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রধান শিক্ষক। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ২০ মে নির্বাচনী তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
।
নির্বাচনে লস্কর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দু'জন নেতা আব্দুল কুদ্দুস সানা ও মোঃ আজিজুল ইসলামসহ খুলনার সরকারী আজমখাঁন কমার্স কলেজ শিক্ষক আলহাজ্জ্ব আনিছুর রহমানসহ পৃথক ৩টি প্যানেল থেকে মোট ১২জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে নামেন। নির্বাচনে ১৫২জন ভোটার ভোট দিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করবেন । নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ায় ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মরত ১৮জন অভিভাবক মোটা অংকের টাকা খরচ করে ভোট দিতে এসেছেন।
এলাকায় পোস্টার, লিফলেট, স্ব-স্ব প্যানেলের প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি পৌছে ভোটের প্রচারনা শেষ করেন।
অন্যদিকে বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ক্ষিতিষ চন্দ্র ঢালী প্রিজাইডিং অফিসারের নির্দেশে ব্যালট পেপার,সিল সহ প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন।
এরই মধ্যে রবিবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে প্রিজাইডিং অফিসারের বরাত দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষিতীষ চন্দ্র ঢালী অনিবার্য কারনে নির্বাচন স্থগিতের তথ্য দিয়ে স্ব-স্ব প্যানেলের প্রধানদের মোবাইলে নির্বাচন স্থগিত এর বিষয়টি সবাই কে জানান। নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে এমন খবর শুনে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবক ও প্রার্থী সহ সর্ব সাধারণ।
এ বিষয়ে মনিরুল ইসলাম -মিজান গাজী প্যানেলের প্রধান কলেজ শিক্ষক আলহাজ্ব আনিছুর রহমান বলেন,বিনা নোটিশে রবিবার রাত সাড়ে ৯ টায় নির্বাচন স্থগিতের কথা শুনে মোবাইলে প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সন্তোষ জনক উত্তর দিতে পারেনি। এর খেশারত কে দিবে এমন প্রশ্ন তুলে তিনি আরোও বলেন, এতে এলাকায় মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হবে ফলে স্কুলটিতে শিক্ষা কার্য্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
সুকুমার-অমল মন্ডল প্যানেলের প্রধান মোঃ আজিজুল গাজী হঠাৎ নির্বাচন স্থগিত করা ভালো কথা নয় বলে আদৌ নির্বাচন হবে কিনা সন্দেহ প্রকাশ করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষিতীষ চন্দ্র ঢালী বলেন, তপশীল ঘোষনার পর নির্বাচন সম্পন্ন করা পর্যন্ত সব দায়দায়িত্ব প্রিজাইডিং অফিসারের। তিনি আরোও জানান, রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মোবাইলে প্রিজাইডিং অফিসারের নির্বাচন স্থগিত কথা শুনে স্ব-স্ব প্যানেলের প্রধানদের মোবাইলে তা জানিয়ে দেওয়া হয়।
এ অভিযোগ সম্বন্ধে ইউআরসি মোঃ ঈমান আলী বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে স্কুল কমিটির নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এবং নোটিশের মাধ্যমে বিষয়টি সবাই কে নিশ্চিত করা হয় বলে তিনি জানান।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহাজাহান আলী শেখ বলেন, এ নির্বাচন নিয়ে প্রিজাইডিং অফিসার বা প্রধান শিক্ষক আমাকে কিছুই জানায়নি। ভবিষ্যতে এডহক কমিটি ছাড়া বিকল্প কোন পথ খোলা নেই বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকালীন সময়ে স্কুল কমিটির নির্বাচন না করার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে পূর্ব থেকেই নির্দেশনা দেওয়া আছে।