বেনাপোল প্রতিনিধি :
যশোরের শার্শার সাড়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী সাইফুল ইসলাম সুমনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির শাস্তির দাবিতে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, এলাকাবাসিসহ সর্বস্তরের মানুষ সাড়াতলা বাজার ও বিদ্যালয়ের সামনে ঝাঁড়– মিছিল ও মানববন্ধন করেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম সুমনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার সাড়াতলা বাজারে ও বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও ঝাঁড়–মিছিল অনুষ্ঠিত। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকগণ বিভিন্ন প্লেকার্ডে দপ্তরি সুমনকে চাকরি থেকে বহিস্কার করা হোক, সুমনের ফাসি চাই, শিশুদের নিরাপত্তা চাই, মেয়েদের নিরাপত্তা চাই. তার বড়ভাই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলামের অন্যত্র বদলি লেখা বিভিন্ন প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।
অভিভাবকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী সাইফুল ইসলাম সুমন ৫ম শ্রেনির কোমলমতি ছাত্রীদের জোর পূর্বক যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির ঘটিয়ে চলেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলাম তার ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম সুমনকে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগের পর থেকে সে কাউকে তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে ছাত্রীদের জোর পূর্বক যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানি করে। প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে আপন ভাইয়ের এহেন অপরাধ জানার পরেও তাকে বাঁচিয়ে দেওয়ায় বার বার সে এ ধরণের জঘণ্য অপরাধ করে চলেছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সুমনের যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির বিষয়টি এক ছাত্রী তার বাবাকে জানালে ঘটনাটি এলাকায় প্রকাশ হয়ে পড়ে। পরে অনেকের কাছ থেকে একই অভিযোগ পাওয়া যায়। ১২ জন অভিভাবক গত ২০ সেপ্টেম্বর লিখিতভাবে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে জানানোর পরেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় অন্যান্য অভিভাবকবৃন্দ ও এলাকাবাসী ফুঁসে ওঠে। পর ২৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসির নিকট অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে সুমন পালিয়ে যায়। সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আজ এলাকার বিভিন্ন অভিভাবকসহ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ঝাঁড়– মিছিল ও মানববন্ধন করলে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।
আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগকারী অভিভাবকদের সাথে কথা বলেছি। অভিযুক্ত সুমন ও তার ভাই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিহি ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মুকুল, বিদ্যালয়ের সভাপতি শিক্ষক নূর মোহাম্মদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা শওকত আলি ও শাড়াতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাস্টার ইসলাম সরদার।
এ ব্যাপারে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত সুমনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুমনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নিয়মিত মামলা হয়েছে।