“জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস” পত্রিকায় সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে প্রস্তাব করা হয়েছে যে, মাটির অধঃপাত হতে ধারাবাহিকতায় পানি অথবা কৃষিকাজের জন্য বিপুল পরিমাণ পানি উত্তোলন পৃথিবীর ঘূর্ণণের অক্ষকে পরিবর্তিত করছে।
গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় ২১৫০ গিগাটন পানি ভূগর্ভ থেকে উত্তোলিত হয়েছে। এক গিগাটনের মান হলো ১০০ কোটি মেট্রিক টন অথবা ১ লক্ষ কোটি কেজি। বিজ্ঞানীরা প্রস্তাব করছেন যে, এই বিপুল পরিমাণ পানি উত্তোলনের ফলে পৃথিবীর অক্ষ প্রতি বছর পূর্বদিকে ৪.৩৬ সেন্টিমিটার স্থানান্তরিত হচ্ছে।
এই গবেষণায় যুক্ত হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন অংশের বিজ্ঞানীরা। সোল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী কি-ওন সিও, তাওন জিওন, জি-সুং কিম এবং কুকিওন ইয়ম, দক্ষিণ কোরিয়ার কুংপং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জিওং ইয়ম। এ ছাড়াও, মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দংরিওল রু, হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির জিয়ানলি চেন, আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস-এর ক্লার্ক আর উইলসন যুক্ত রয়েছেন।
বিজ্ঞানী দলটি জিওডেসিতে (মহাকাশ থেকে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ পর্যবেক্ষণের এক পদ্ধতি) এবং গ্রেভিটি রিকভারি এবং ক্লাইমেট এক্সপেরিমেন্ট (GRACE) ডেটা ব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রাপ্ত হয়েছে। GRACE একটি মহাকাশ মিশন যা পৃথিবীর গুরুত্বাকর্ষণ ক্ষেত্রের সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনগুলি মাপে।
এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, বিশাল পরিমাণ পানি উত্তোলনের জন্য একটি স্থানান্তরিত অক্ষ হতে পারে। পরিণতি পৃথিবীর অক্ষের স্থানান্তরণ ঘটেছে, যা আমাদের গ্রীনিচ মিন টাইম (GMT) এর সাথে মিলে যাওয়ার জন্য বদলে যেতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এই অনুসন্ধান মাধ্যমে যে ধারণা নিয়ে চলেছেন তা হলো, পৃথিবীর ঘূর্ণণ এবং অক্ষের স্থানান্তরণের মধ্যে সংযোগ রয়েছে। এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন হলেও, এই প্রাথমিক পাঠের ফলাফল মানবজাতির প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপর একটি বৃহৎ প্রভাব ফেলে দিতে পারে। যদি আমরা এই সমস্যাটি সমাধান করতে না পারি, তবে পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা উভয়েই বৃহৎ প্রভাব পরিমাপ করা হতে পারে। সুতরাং, এটি মানবজাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে গণ্য হবে।