মোঃপারভেজ খাঁন ইমন লবনচরা(খুলনা)প্রতিনিধি
মাহে রমজান সংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস।এ মাসে রোজা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে রাসুল (সা.) বলেন, শুধু পানাহার পরিহারের নাম রোজা নয়, বরং অনর্থক ও অশ্লীলতা পরিহারের নাম হচ্ছে সিয়াম। অতএব যদি তোমাকে কেউ গালি দেয় কিংবা তোমার সঙ্গে কোনো মূর্খতাসুলভ কাজ করে, তাহলে তুমি বলবে, আমি সায়েম, আমি রোজাদার। (সহিহ ইবনে খুজায়মা, হাদিস : ১৯৯৬; সহিহুল জামে, হাদিস : ৫৩৭৬)
মহানবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ পরিহার করল না, তার পানাহার পরিহারে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৩)
গিবত ভয়াবহ পাপ।মহান আল্লাহপাক বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণ্যই মনে করো।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)ছে। রোজাদারকে আল্লাহ নিজ হাতে পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। আর বেশ কিছু কাজ আছে যেগুলো রোজা অবস্থায় তো বটেই সবসময় করতে নিষেধ করেছেন স্বয়ং রাসুল (সা.)। সেগুলো হচ্ছে- অনর্থক ও নির্লজ্জ কথা-কাজ, গালাগাল, পরনিন্দা, চোগলখুরি ও প্রতারণা।রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা কি জানো গিবত কী? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলুল্লাহ (সা.) বেশি অবগত। তিনি বলেন, তোমার কোনো ভাইয়ের এমন কোনো বিষয় উল্লেখ করা, যা সে অপছন্দ করে।
বলা হলো, (এ ব্যাপারে) আপনার অভিমত কী যে আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে? তিনি বলেন, তুমি যা বলো, তা যদি তোমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে, তাহলে তুমি তার গিবত করলে। আর যদি তার মধ্যে না থাকে তাহলে তুমি তার প্রতি অপবাদ দিলে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৪)
মহানবী (সা.) বলেছেন, মিরাজের রাতে আমি এমন এক সম্প্রদায়ের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরি, যা দ্বারা তারা অনবরত তাদের মুখমণ্ডল ও বক্ষদেশে আঁচড় কাটছে। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা হে জিবরিল! তিনি বলেন, এরা ওই সব লোক, যারা মানুষের গোশত খেত (গিবত করত) এবং তাদের মান-সম্মানে আঘাত হানত। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮)চোগলখুরি হচ্ছে বিবাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্যজনকে বলা। এটা বড় পাপ। রাসুল (সা.) বলেন, চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৮১)
অন্য একটি হাদিসে এসেছে, একদা নবী করিম (সা.) দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বলেন, এই দুই ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। অথচ তাদের বড় কোনো পাপের কারণে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। তাদের একজন পেশাব থেকে সতর্কতা অবলম্বন করত না। আর অপরজন চোগলখুরি করে বেড়াত। (বুখারি, হাদিস : ২১১)
প্রতারণা মুসলমানের কাজ নয়। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পকর্ম, কৃষিকাজসহ সর্বপ্রকার আচার-ব্যবহার, পরামর্শ-উপদেশ ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে ধোঁকা-প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা পরিত্যাগ করা অপরিহার্য। কেননা এটা বড় গোনাহের কাজ। প্রতারক উম্মতে মুহাম্মদির অন্তর্ভুক্ত নয়।
রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি আমাদের (মুসলমানদের) ধোঁকা দেয়, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।