বিশেষ প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগ সরকার পতন হওয়ায় দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার সুযোগে একটি মহল এলাকার সাধারণ মানুষের বাড়িঘর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। লুটপাট করা হয়েছে মৎসকেরের মাছ সহ নগদ টাকা পয়সা স্বর্ণ অলংকার সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র। সম্প্রতি সেনাবাহিনী এলাকায় আশায় ও নিয়মিত টহল দেওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসছে।
এর আগে সাধারণ মানুষের মধ্যেও একটি ভয় ভীতি ও আতঙ্ক কাজ করে চলেছিল। ইতিমধ্য থানায় প্রবেশ করেছে পুলিশ। আইনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুলতানা খাতুন। বুধবার ১৩ আগস্ট ২০২৪, বটিয়াঘাটা থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন, খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা উপজেলার লক্ষ্মীগোলা এলাকার মোঃ মাহফুজুর রহমান এর স্ত্রী সুলতানা খাতুন।
ভুক্তভোগী পরিবার তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, এলাকার মোঃ বাপ্পি মল্লিক (২৮), পিতা- মাফুজুল মল্লিক, মো শুকুর মোল্যা (২৯), পিতা- মুছা মোল্যা, মোঃ মহিউদ্দিন মল্লিক (২৮), পিতা- জাফর মল্লিক, মোঃ শুকুর মল্লিক (২৬), পিতা- মোঃ তালেব মল্লিক, ইমরান শেখ (২৬), পিতা- আসলাম শেখ, সর্বসাং- ভান্ডারকোট, জিয়াউল শেখ (৪০), পিতা- মোতালেবশেখ, আতাউর শেখ (২৮), পিতা- মোতালেব শেখ, মিজান শেখ (৩০), পিতা- মোতালেব শেখ, বেকরুল শেখ (৪৫), পিতা- হাবিবুর শেখ, সোহেল বিশ্বাস (২৮), পিতা- ইসমাইল বিশ্বাস, জুয়েল বিশ্বাস (২৬), পিতা- ইসরাইল বিশ্বাস, মিঠু বিশ্বাস (৩৭), পিতা- মোস্তাব বিশ্বাস, বাবলু বিশ্বাস (৪৫), পিতা- মুছা বিশ্বাস, হাফিজুল মলঙ্গী (২৫), পিতা- জাফর মলঙ্গী, তামিম বিশ্বাস পিতা- হালিম বিশ্বাস, রুমান বিশ্বাস (২৩), পিতা- ওদুদ বিশ্বাস, তরিকুল গাজী (৩২), পিতা- আতি গাজী, শফিকুল গাজী (৩৭), পিতা- আতি গাজী, হাসান গোলদার (৩০), পিতা- জলিল গোলদার, সর্বসাং- লক্ষ্মীখোলা, খোকন শেখ (৩৫), পিতা- মনিরুল শেখ, সাং- ভান্ডারকোট, আলামিন শেখ (৩৭), পিতা- ওসিকার শেখ, সাং- ভাতগাতী, সাগর ফকির (৪২), পিতা- আঃ মজিদ ফকির, মোকে মোল্যা (৩১), পিতা- অজ্ঞাত, সাং- ভাতগাতী, থানা- বটিয়াঘাটা, জেলা- খুলনা সহ অজ্ঞাত নামা ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসীদের সাথে আমার স্বামীর সাথে এলাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ আছে।
বিরোধের কারনে বিবাদীগন আমাকে সহ আমার স্বামীর ক্ষতি করার জন্য সুযোগ খোজে। বর্তমান দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায়, সরকার পতন হওয়ায় দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার সুযোগকে বিবাদীগন কাজে লাগিয়ে আমার ক্ষতি করার জন্য গত ইং- ০৫/০৮/২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭ টার সময় ১ নং বিবাদীর নেতৃত্বে সকল বিবাদীরা সহ অজ্ঞাত নামা ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসী বে-আইনী জনতাবদ্ধে হাতে রাম দা, ধারালো হাসুয়া, লোহার রড, কুড়াল, লোহার পাইপ, গ্যাস লাইট নিয়ে আমার বসতবাড়ীর গেটের তালা ভেঙ্গে বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করে।
আমার স্বামী ঐ সময় বাড়ী ছিল না। তখন বিবাদীরা আমার বাড়ীর কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙ্গে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে ঘরের সামনে গ্রিল ভাংতে থাকে। তখন আমার শ্বশুর, শাশুড়ী, আমার ভাষুর, আমার দেবর ও আমি বিবাদীদের বাধা দিলে বিবাদীরা আমাদের মারপিট করে এবং অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উঁচু করে হুমকি দিয়ে বলে আমরা যদি চিৎকার চেচামেচি করি তাহলে আমাদের গুলি করে মেরে ফেলবে। আমরা বিবাদীদের ভয়ে নিরবে দাড়িয়ে থাকি।
সকল বিবাদীরা আমার ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে ঘরের মধ্যে থাকা আসবাব পত্র সহ বিভিন্ন মালামাল ভাংচুর করে অনুমান ৭,০০,০০০/- টাকার ক্ষতি সাধন করে। বিবাদীরা আমার ঘরের মধ্যে থাকা সোকেচের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৫৫,০০০/- টাকা নিয়ে নেয়। বিবাদীরা আমার ঘর থেকে বের হয়ে আমাদের গোয়াল ঘরে থাকা বিদেশী জাতের ৭ টি ছোট বড় গরু মূল্য অনুমান ৫,০০,০০০/- টাকা ও আমার ঘরের মধ্যে থাকা ৪ ভরি ওজনের স্বর্নের গহনা মূল্য অনুমান ৪,৪০,০০০/- টাকা নিয়ে নেয়। বিবাদীরা রাম দা, ধারালো হাসুয়া, লোহার রড, কুড়াল, লোহার হাতুড়ী, লোহার পাইপ উঁচু করে প্রকাশ্যে দাড়িয়ে হুমকি দিয়ে বলে যে, বর্তমান ক্ষমতা তাদের, তাদের যদি কেউ বাধা প্রদান করে তাহলে তাকে মারপিট করে হত্যা করিবে মর্মে হুমকি দিয়ে আমার বসতঘর, গোয়াল ঘর থেকে মালামাল লুট করে নিয়ে চিৎকার করতে করতে চলে যায়।
দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার কারনে থানা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অভিযোগ দায়ের করতে সামান্য বিলম্ব হইল। প্রকাশ থাকে যে, নার্গিস বেগম, স্বামী- জিয়া শেখ তার বাড়ী থেকে কুড়াল, দা, শাবল সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র বিবাদীদের দিয়ে সাহায্য করে। বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রিপন কুমার সরকার বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা থানায় অভিযোগ দায়ের করছেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।