সর্বশেষ:

Koira bridge

পাইকগাছার শিববাটি ও কয়রার চাঁদ আলী সেতুর টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা

Koira bridge
Facebook
Twitter
LinkedIn

পাইকগাছা ( খুলনা ) প্রতিনিধি

খুলনা-কয়রা-পাইকগাছা সড়কে চাঁদ আলী ও শিববাটি সেতুর টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর টিপু ছিলেন সেতু দুটির ইজারাদার।

বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) থেকে শিক্ষার্থীরা সেতু দুটির টোল আদায় বন্ধ করে দেয়। গত ১৩ বছর ধরে এ সেতুর টোল আদায় করছেন তারা।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে সেতু দুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এর পর থেকে নিয়মিত সেতু দুটি ইজারা দেওয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৯৪৩ দিনের জন্য সেতুর টোল আদায়ের ইজারা পায় খুলনা সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক মো. আলী আকবর টিপুর প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলী আকবর এন্টারপ্রাইজ। ভ্যাট, আয়করসহ ইজারা মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা।

শিববাটি ও কয়রার চাঁদ আলী সেতুর টোল

পাইকগাছার শিববাটি সেতুর পাশের বাসিন্দা ভ্যানচালক রিয়াসদ সানা বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই সেতুর টোল আদায় বন্ধ করার দাবি জানাই। এলাকাবাসীর দাবির মুখে কিছুদিনের সেতুর টোল আদায় বন্ধ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতারা আবার সেতুর টোল আদায় শুরু করেন। টোল দিতে না চাইলে আদায়কারীরা খারাপ আচরণ করতে শুরু করে। পরে যানবাহন চালকরা টোল দিয়ে সেতু পার হতে শুরু করে।

চাঁদ আলী সেতুর পাশে খান সাহেব কোমর উদ্দিন কলেজ। এ কলেজে দুই পাশের এলাকার ছাত্রছাত্রীরা এখানে লেখাপড়া করতে আসেন।

এ কলেজের হিসাব বিজ্ঞান ২য় বর্ষের ছাত্র ইলিয়াস পাড় জানান, সেতুর দুই পাশের শিক্ষার্থীরা এ কলেজে লেখাপাড়া করেন। শুধু তাই নয় এ কলেজের পাশে একটি নামকরা জায়গীর মহল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যেখান থেকে প্রতি বছর কয়েক শত ছাত্রছাত্রী উচ্চ শিক্ষার জন্য বেরিয়ে যান। তারাও এ সেতু পার হয়। এ সেতুতে ভ্যানসহ সবধরনের যানবাহনের টোল দেওয়া লাগে। সারা দিনে দুই থেকে আড়াইশত যানবাহন এ সেতু দিয়ে পার হয়। এলাকাবাসীর দাবি, সেতুর টোল বন্ধ করার। ছাত্ররা সেই দাবি পূরণ করেছে। এখন থেকে এ সেতুতে আর কোনো টোল আদায় করতে দেওয়া হবে না।

দুই সেতুতে টোল আদায়ের কাজে সার্বক্ষণিক ২০-২৫ জন লোক থাকতেন। কেউ কিছু বলতে গেলে তেড়ে আসতেন। প্রায় তাদের হামলার শিকার হয়েছেন চলাচলকারীরা। বৃহস্পতিবার থেকে ইজারা আদায় বন্ধ আছে।

কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম বলেন, রোজার ঈদের সময় অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে সেতুর ওপর মারধর করেছিলেন ইজাদারের লোকজন। দুই সেতু দিয়ে একবার পার হলেও দুবারের টাকা পরিশোধ করতে হতো। এখন আমরা নতুনভাবে বাংলাদেশটা গড়তে চাই।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম ও সমন্বয় কমিটির সভাপতি বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, খুলনা-কয়রা সড়কের দুই সেতুতে টোল আদায়ের নামে রীতিমতো চাঁদাবাজি হতো।

ইজারাদার আলী আকবর বলেন, তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে ইজারা নেয়া হলেও টোল আদায় করেন সাব কন্ট্রাকটর আনারুল ইসলাম ও মিনারুল ইসলাম। তারা যদি কোনো অন্যায় করে থাকে তাহলে তার দায় আমার নয়।

সওজ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান বলেন, খুলনা-কয়রা সড়কে অবস্থিত শিবসা ও কয়রা সেতুর টোল আদায় শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। এখন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে পরের সময়ে কী করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana