এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ,পাইকগাছা ( খুলনা )
খুলনার পাইকগাছায় সজিনার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর সজিনার ফলন ভালো হয়েছে। সজিনায় উচ্চ মূল্য পাওয়ায় চাষীরা খুশি। শুরুতে বাজারে সজিনার কেজি ১৬০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীরা ক্ষেত থেকে একশত থেকে একশত দশ টাকা দরে পাইকারী ক্রয় করছে। মূল্য বেশি পাওয়ায় কৃষকরা সজিনার ডাল রোপন করতে উৎসাহিত হচ্ছে। বসতবাড়ীর আশে পাশে রাস্তার ধারে ক্ষেতের আইলে লাগানো সজনে গাছ যত্ন ছাড়াই অবহেলার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে। সজিনা পুষ্টি ও ভেষজগুনে ভরা সবজি হিসাবে খুব দামী।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায ৩৫ হেক্টর জমিতে ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার সজিনা গাছ আছে। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪ থেকে সাড়ে ৪ টন। দেশে ২টি জাত আছে, একটি হালো সজিনা ও আর একটি নজিনা। ভারত থেকে হাইব্রিড সজিনার জাত এদেশে এসেছে। এ জাতের বীজ বপন করে লাগাতে হয়। হাইব্রিড জাতের সজিনা গাছে দু’বার ফুল আসে। ফেব্রুয়ারী-মার্চ ও জুন-জুলাই মাস। গত বছর উপজেলায় ২১ হাজার সজিনার ডাল রোপন করা হয়েছে।
সজিনা গাছের পাতা, ফুল, ফল, বাকল ও শিকড় সবই মানুষের উপকারে আসে। সজিনার পুষ্টি গুন অনেক বেশী। এ গাছের অনেক গুন থাকায়, এ গাছকে যাদুর গাছ বলা হয়। কাঁচা সবুজ পাতা রান্না করে, ভর্তা করে ও বড়া ভেজে খাওয়া যায়। ফল সবজির মত রান্না করে খাওয়া যায়, ফল পাকলে সে সব ফলের বীজ বাদামের মতো ভেজে খাওয়া যায়। সজিনার পাতা, ফল, ফুল, বীজ, ছাল, মুলের ভেষজ গুনও আছে।
তাই সজিনা গাছের বিভিন্ন অংশ ভেষজ চিকিৎসায় কাজে লাগে। সজিনার পাতার পুষ্টিগুন বেশী, যেভাবে খাওয়া হোক না কেন তা শরীরে পুষ্টি যোগাবে, আর ঔষধীগুন তো আছেই। সজিনার পাতায় যে পরিমাণ পুষ্টি রয়েছে তা অনেক পুষ্টিকর খাবারেও নেই। যেমন, ডিমের চেয়ে বেশী আমিষ, দুধের চেয়ে বেশী ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে বেশী ভিটামিন সি, কলার চেয়ে বেশী ক্যালসিয়াম, গাজরের চেয়ে বেশী ভিটামিন এ আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সজিনার ভালো ফলন হয়েছে। তিনি আরো জানান, উপজেলার প্রতি বাড়ীতে কমবেশি সজিনা গাছ আছে। সজিনা পুষ্টিকর সবজি হিসাবে ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরিকল্পিতভাবে সজিনা ক্ষেত গড়ে তোলার জন্য উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে।