সর্বশেষ:

খরস্রোতা শিবসা

পাইকগাছায় কালের বিবর্তনে এক সময়ের খরস্রোতা শিবসা নদী আজ শুধুই স্মৃতি ; গোচারন ভূমিতে পরিনত

খরস্রোতা শিবসা
Facebook
Twitter
LinkedIn

এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ,পাইকগাছা ( খুলনা )

এখানে একটা নদী ছিল, এ কথা বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কাছে অবিশ্বাস করার মত কথা। কালের বিবর্তনে এক সময়ের খরস্রোতা শিবসা নদী আজ শুধুই স্মৃতি। শিববাটি থেকে সোলাদানা পর্যন্ত শিবসা নদী ভরাট হয়ে আজ গোচারণ ভূমিতে পরিনত হয়েছে। খরস্রোতা এ শিবসা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে ও নদী খননের দাবিতে প্রায় সময় উপজেলা পানি কমিটি, নদী বাচাঁও আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানিয়ে আসছেন।

উল্লেখ্য, খুলনার পাইকগাছায় নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী নদী শিবসা।গত কয়েক বছরের ব্যবধানে নদীটি সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে যাওযার উপক্রম হয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বন্ধ হয়ে গেছে নৌযান চলাচল এবং এর প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর। নদীটি দ্রুত খনন না করলে দু-এক বছরের মধ্যে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আশংকায় রয়েছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, এ এলাকার নদ-নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম শিবসা নদী। কপোতাক্ষের শেষ প্রান্ত হতে শুরু হয়েছে শিবসা। যা বহমান আকারে মিশেছে সুন্দরবনে। উপজেলার অন্যান্য নদ-নদীগুলোর সংযোগ রয়েছে শিবসার সাথে। যার কারণে বৃহৎ এলাকার পানি সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে শিবসা।

খরস্রোতা শিবসা

পাইকগাছা পৌরসভার পাশ দিয়ে প্রবাহমান শিবসা নদী। বিশাল দৈর্ঘ্যের এ নদীর প্রায় ২৫ কিলোমিটারই ভরাট হয়ে গেছে। তীব্র নাব্য সংকটে এ নদীতে এখন আর নৌকা চলাচল করতে দেখা যায় না। পাইকগাছার অন্তত তিন লাখ মানুষ শিবসা নদীর দুই পাড়ে বসবাস করছেন। ফসলি জমি ছাড়া নদীর তলদেশে পলি পড়ে উঁচু হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

এ এলাকার নদ-নদীগুলোর মধ্যে অন্যতম শিবসা নদী। যার কারণে বৃহৎ এলাকার পানি সরবরাহের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এ নদী।

গত ৩ দশক আগেও ঐতিহ্যবাহী নদীটি ছিলো ভরা যৌবন। এলাকার যখন অবকাঠামোগত উন্নয়নে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি তখন যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিলো শিবসা নদী। জেলা শহরে যাতায়াতসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সকল পণ্য আনা-নেওয়ার অন্যতম মাধ্যমও ছিলো এ নদীটি। জেলে সম্প্রদায়সহ শত শত নিম্ন আয়ের পরিবার নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী নদীটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। পলি জমতে জমতে শিবাটী থেকে সোলাদানার ত্রিমোহনী পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার নদী সম্পূর্ণ ভরাট হয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে।পাইকগাছা পৌরসভা ছাড়াও উপজেলার গদাইপুর, লতা, সোলাদানা, দেলুটি, লস্কর ও গড়ুইখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে শিবসা নদী। অনেকে নদীর জায়গায় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন। যে কারণে দিন দিন নদীর জায়গা কমছে। নদীর তলদেশে পলি পড়ে উঁচু হয়েও ভরাট হচ্ছে। এ ছাড়া নদীর জমি দখল করে চিংড়ি ঘের করেছে অনেক প্রভাবশালীরা।পৌর সদরের অনেক দোকানদার বলেন, পাইকগাছার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে এ নদীর অবদান অনেক। এই নদী দিয়ে কম খরচে মালামাল আনা-নেওয়া হতো। কিন্তু নদী ভরাট হওয়ার কারনে ট্রাকে করে মালামাল আনতে হয়। এতে পরিবহন খরচ বেশি হচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী পরিচালক রাজু হাওলাদার জানান, নদী খনন না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানের উপায় নেই। খননের জন্য জরিপ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই নদীটি খননের দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana