পাইকগাছা ( খুলনা ) প্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছায় কপোতাক্ষী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও ভোটার তালিকার তথ্য না দেয়া সহ নানাবিধ বিষয়ে উপজেলা ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেছেন ওই এলাকার অভিভাবকেরা। সোমবার সকালে প্রায় অর্ধশত অভিভাবক স্বাক্ষরিত আবেদনটি নিয়ে অভিভাবকবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন এর দপ্তরে জমা দেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,পাইকগাছায় কপোতাক্ষী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ২৬/০৫/২৪ শেষ। এদিকে সংবিধান গেজেটে উল্লেখ রয়েছে নির্বাচনের ৮০ দিন পূর্বে তফসিল ঘোষনা করতে হবে। এখনো তফসিল ঘোষনা করা হয়নি।এতে করে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাবাসির মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবক জুয়েল খাঁন জানান, কপোতাক্ষী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের সম্ভাব্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকার বিষয়ে তথ্য নিতে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুকুমার রায় অসুস্থ থাকায়,বর্তমান দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক অমিত কুমার মন্ডল বলেন সভাপতি'র অনুমতি ছাড়া কোন তথ্য অফিসের বাইরে কাউকে দিতে পারবেন না।
পরবর্তীতে তাঁরা তথ্য নিতে যান অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম খান এর কাছে। তিনি তাদেরকে হামলা-মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং বলেন ভোটারদের কোন তথ্য আমার প্রতিষ্ঠান দিতে বাধ্য নয়। তিনি আরও বলেন প্রয়োজন হলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট থেকে নিয়ে আসেন। প্রতিকার পেতে সোমবার পাইকগাছা উপজেলা ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অভিভাবকেরা। সাবেক নির্বাচিত ১নং অভিভাবক সদস্য আজিজুর রহমান লাল্টু বলেন সভাপতির ব্যাক্তিগত ক্ষমতায় ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পেশি শক্তির বলে একাধিকবার ক্ষমতায় বসে আছে। অথচ সংবিধান গেজেটবলে একই ব্যাক্তি দুই বারের বেশি নির্বচন করতে পারবেন না।
কিন্তু তিনি তার ক্ষতার বলে আজ এগারো বছর নির্বাচন না দিয়ে সভাপতির পদ দখল করে বসে আছে ।তিনি আরো বলেন সভাপতি কোন অভিভাবক কে মূল্যয়ন করেন না এছাড়াও বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ গত দুই বছর যাবত খেলা-ধুলা বন্ধ করে রেখেছে। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থী সহ তরুণ প্রজন্ম খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা মাঠে খেলা করতে না পেরে মোবাইল গেম ও মাদকাসক্ত হচ্ছে।
চাঁদখালী ইউপির আওয়ামী লীগের ১নং ওয়ার্ড সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম গাজী বলেন, বিদ্যালযের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। এখনো তফসিল ঘোষণা করা হয়নি।
দ্রুত সময়ে মধ্যে তফসিল ঘোষণা করে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া হোক।এই বিদ্যালয়ে এমন কাউকে সভাপতি করা হোক যে এই বিদ্যালয়ে উন্নয়ন কাজ করবে তাকে আমরা সভাপতি নির্বাচিত করবো। প্রতি বছর এই ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে শিক্ষক অভিভাবকদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়।এই ঝামেলা যাহাতে না হয় তার জন্য দ্রুত তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন দেওয়া হোক।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সালাম খান এর মুঠো ফোনে কমিটির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি বাইরে আছি আমি ফিরে কি ভাবে কমিটি দেওয়া যায় এ বিষয় নিয়ে কথা বলবো সবার সাথে।
উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার অনাথ বিশ্বাস জানান, আমি সরেজমিনে গেলে ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক অমিত কুমার মন্ডল বলেন আমার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর হয়নি । ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে আমি কিছু করতে পারবো না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন অভিযোগটি ডাক ফাইলে আসতে পারে।আমি এখনো দেখার সুযোগ পাইনি। আমি দেখে বিস্তারিত জেনে ব্যাবস্থা গ্রহন করতে পারবো।
এ ব্যাপারে সচেতন অভিভাবক মহল যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে তপসিল ঘোষনা,ভোটার তালিকা প্রনয় সহ সুষ্ট নির্বাচনের দাবী জানান।