সর্বশেষ:

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে গেল ১৭৪ মেট্রিক টন ইলিশ

তিনদিনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে গেল ১৭৪ মেট্রিক টন ইলিশ

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে গেল ১৭৪ মেট্রিক টন ইলিশ
Facebook
Twitter
LinkedIn

বেনাপোল প্রতিনিধি :
শারদীয় দুর্গা উৎসব উপলক্ষে বেনাপোল বন্দর দিয়ে গত তিনদিনে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ১৭৪ মেট্রিক টন। এবার ভারতে ইলিশ রপ্তানি হবে মোট তিন হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন। আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে সব ইলিশ রপ্তানির নির্দেশনা রয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা:) ও শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় টানা দুই দিন বন্ধ থাকবে ইলিশ রপ্তানির কার্যক্রম।

পূজার আগে পদ্মার ইলিশ পেয়ে ভারতীয়রা খুশি হলেও রফতানিতে দেশে ইলিশের সঙ্কট দেখিয়ে দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। বর্তমানে দেশীয় বাজারে কেজিতে ইলিশের দাম বেড়েছে ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত।

জানা যায়, আগামী ২০ অক্টোবর শুরু হচ্ছে পূজা উৎসব। আর এ পূজা উৎসবে পশ্চিম বাংলার মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় এপারের পদ্মার ইলিশ। সারা বছর ধরে তারা অপেক্ষায় থাকে পূজার সময় বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসবে, আর তারা অতিথিদের আপ্যায়নে ইলিশের বিভিন্ন রান্না তুলে দেবেন প্লেটে।
বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোলে ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ভারতে দুর্গাপুজা মানে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখা, প্রিয়জনদের সঙ্গে আড্ডা আর জমজমাট খাওয়া দাওয়া। ইলিশ ছাড়া বাঙালির খাওয়া দাওয়া যেন পরিপূর্ণ হয় না। আর দুর্গাপুজোর আগেই ভোজনরসিক বাঙালির কাছে সর্বোৎকৃষ্ট মহরত। রেস্তোরা হোক বা বাড়িতে অষ্টমী বা নবমীর দুপুরে সর্ষে ইলিশ, ইলিশ ভাপা বা ইলিশ পাতুরি, ইলিশ বিরিয়ানি দিয়ে লা না করলে পুজার আনন্দ অনেকটাই মাটি হয়ে যায়। স্বাদে গন্ধে পদ্মার ইলিশের জুড়ি মেলা ভার। এবার বাংলাদেশের ইলিশ আসার কারণে পুজায় ইলিশ রসনায় তৃপ্ত হবে বঙ্গ সমাজ এ কথা বলাই বাহুল্য।

পেট্রাপোল চেকপোস্টের আমদানিকারক রামকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, এখন থেকে প্রতিদিনই কিছু কিছু করে আসতে থাকবে বাংলাদেশের ইলিশ। অবশেষে ইলিশ যে এসে পৌঁছেছে এটাই আনন্দের। গতবারও ইলিশ মাছ পাঠিয়েছিল বাংলাদেশের সরকার। এবার কিছুটা দেরিতে হলেও, বাঙালি এই মাছ পাবে। পুজোর আগে এর থেকে বড় সুখবর আর কী বা হতে পারে। অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে।

তবে ইলিশ আহরণ কমে যাওয়ায় সরকার ২০১২ সাল থেকে দেশের বাইরে ইলিশ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে করে ছয় বছর ধরে ইলিশ ছাড়ায় পূজা পার করে পশ্চিম বাংলার মানুষ। অবশেষে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য আর দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব বৃদ্ধির লক্ষে সরকার ২০১৯ সাল থেকে পূজা উপলক্ষে আবারো নির্দিষ্ট হারে ইলিশ রফতানি করে আসছে। এ বছর পূজায় ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতিতে গত তিনদিনে ১৭৩ মেট্রিক টন ৭০০ কেজি ইলিশ রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ৭৭ মেট্রিক টন ১০০ কেজি, শনিবার ৪০ মেট্রিক টন ১০০ কেজি এবং সোমবার ৫৬ মেট্রিক টন ৫০০ কেজি ইলিশ ভারতে রফতানি হয়েছে।
অন্যদিকে, ইলিশ রফতানিতে সঙ্কটের দোহায় দিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে যশোরের বিভিন্ন বাজারে কেজিতে ইলিশের দাম বেড়েছে ৪০০-৫০০ টাকা। এতে পছন্দের এ মাছটি কিনতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের সাধারণ ক্রেতারা।

বেনাপোল বাজারে ইলিশ কিনতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে সেলিম রেজা জানান, এ বছর এখনো ইলিশ কিনতে পারেননি। ভেবেছিলেন সন্তানদের শখ মেটাতে ছোট একটা কিনবো, কিন্তু বাজারে এসে দেখি দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে আর ইলিশ কেনা হয়নি তার।
বাজারের ইলিশ বিক্রেতা শহিদ জানান, ভারতে ইলিশ রফতানির কারণে সঙ্কট বেড়েছে। বেশি দামে কেনায় বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ দুই হাজার টাকা ও ৫০০ গ্রামের ইলিশের দাম ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেনাপোল মৎস্য অফিসের ফিশারিজ কোয়ারেন্টাইন অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার থেকে সরকারের বিশেষ অনুমতির ইলিশ রফতানি শুরু হয়েছে। গত তিন দিনে (বৃহস্পতিবার, শনিবার ও সোমবার) ১৭৩ মেট্রিক টন ৭০০ কেজি ইলিশ ভারতে গেছে। বাকি ইলিশ আগামী ৩০ অক্টেবরের মধ্যে রফতানি শেষ করবে দেশের ৭৯টি ইলিশ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana