ডুমুরিয়া প্রতিনিধি :
খুলনার ডুমুরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসকদের দ্বারা লাঞ্ছিতের শিকার হয়েছেন বৈশাখী টেলিভিশনের খুলনা প্রতিনিধি ও দৈনিক খুলনার মফস্বল সম্পাদক শেখ হেদায়েতুলাহ। তিনি সোমবার রোগীদের ভোগান্তি, ওষুধ পাচার, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। বর্হিবিভাগের টিকিট কাউন্টার ও রোগীদের অপেক্ষার স্থানে রোগীদের সাথে কথা বলছিলেন তিনি।
এসময় হাসপাতালের চিকিৎসক রিফাতসহ বেশ কয়েকজন এসে মোবাইল ফোন ও বৈশাখী টেলিভিশনের বুম (মাইক্রোফোন) কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে হুমকি দেওয়া হয়। অন্যথায় পুলিশ দিয়ে হয়রানির কথাও বলেন বলে তিনি জানান।
সাংবাদিক শেখ হেদায়েতুলাহ বলেন, যেহেতু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মিটিংয়ে রয়েছেন তাই ভিডিও করার জন্য অনুমতি নেয়া হয়নি। তাছাড়া পাবলিক প্লেসে ভিডিও করতে কারও অনুমতি নেয়ার জন্য সাংবাদিকের প্রয়োজন পড়ে না। তিনি বলেন, কর্মকর্তার সাথে তিনি কথা বলবেন।
এক পর্যায়ে চিকিৎসক নাঈম, সাব্বিরসহ আরও কয়েকজন তেড়ে আসেন। এ সময় ডুমুরিয়া উপজেলার দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক জিএম আব্দুস সালাম ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। তার সঙ্গেও ডাক্তার রিফাত ও নাইম দুর্ব্যবহার করে বলেন, সাংবাদিকতা শিখিয়ে দেয়া হবে। অমন দু’চারজন সাংবাদিক পিছনে পিছনে ঘুর ঘুর করে থাকে আমাদের।
এক পর্যায়ে সাংবাদিকদ্বয়কে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কক্ষে এক প্রকার টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে কক্ষ আটকে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কাজল বিশ্বাস তার কক্ষ থেকে বের হয়ে আসলে সাংবাদিক শেখ হেদায়েতুলাহ বিএমএ খুলনার সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলমকে ফোন দেন।
তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বললে সে সময়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। ঘটনার কিছু পরে ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহনেওয়াজ হোসেন জোয়াদ্দার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং ঘটনা শুনে দুঃখজনক বলে উলেখ করেন।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সবিজুর রহমান বলেন, সংরক্ষিত এলাকা ছাড়া সাংবাদিকরা যে কোন স্থানের ভিডিও করতে পারেন। এতে আইনগত কোন বাঁধা নেই। আর হাসপাতালের বর্হিবিভাগের ভিডিও করার কোন সমস্যা তো নয়। তিনি বলেন, কোন স্থানে যদি নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত বা গোপন রক্ষার বিষয় থাকে সেখানকার ভিডিও চিত্র ধারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন খুলনা শাখার সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম বলেন, সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের ভিডিও করতে সাংবাদিকদের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যদি সংরক্ষিত কোন স্থাপনা হয় বা নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে অনুমতি নিয়ে ভিডিও করা উচিৎ। তিনি বলেন চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে এটি দুঃখজনক।