মোঃপারভেজ খাঁন ইমন লবনচরা(খুলনা)প্রতিনিধি
মাহে রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত হলো এতেকাফ।হাদিসের গ্রন্থসমূহে এতেকাফের অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজীবন রমজান মাসের শেষ দশ দিনে এতেকাফ করেছেন।
হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আয়েশা (র) বর্ণিত— তিনি বলেন, নবীজি (স) রমজানের শেষ দশ দিনে এতেকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকে শবেকদর অনুসন্ধান কর। (বুখারি, মুসলিমএ জন্য রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজান সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে ঈদের চাঁদ তথা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া বা ৩০ রমজান পূর্ণ হয়ে ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত (৯ দিন বা ১০ দিন) এতেকাফ করাকে সুন্নাতে মুআক্কাদাহ কিফায়াহ সাব্যস্ত করা হয়েছে।
কোনো মসজিদে মহল্লার কয়েকজন বা কোনো একজন আদায় করলে সবাই দায়মুক্ত হবে। আর কেউই আদায় না করলে সবাই গুনাহগার হবে। তবে আদায়ের ক্ষেত্রে যিনি বা যারা আদায় করবেন,শুধু তিনি বা তারাই সওয়াবের অধিকারী হবেন।
আমাদের সমাজে কোথাও লক্ষ করলে দেখা যায় দায়মুক্তির জন্য কাউকে এতেকাফের জন্য চুক্তিপূর্বক ভাড়া করা হয়।এতেকাফ শেষে তাকে তার বিনিময় দেওয়া হয়। এই পদ্ধতি কতটুকু শরিয়তসম্মত এবং এতে সওয়াব পাওয়া যাবে কি? অথবা সেই এলাকার লোকেরা কি এর মাধ্যমে দায়মুক্ত হবে? এটা জানা থাকা দরকার।
এর সঠিক ও গ্রহণযোগ্য উত্তর হচ্ছে— টাকার বিনিময়ে কৃত এতেকাফে কোন সওয়াব হবে না। এবং এমন এতেকাফের মাধ্যমে এলাকাবাসী দায়িত্বমুক্ত হবে না। কেননা, এতেকাফ হলো— একটি ইবাদত। আর ইবাদত হয় একমাত্র আল্লাহর জন্য। ইবাদতকে ব্যবসা বানানো বা বিক্রি করা জায়েজ নয়।
তবে যদি কেউ খুশি মনে কেউ এতেকাফে বসে। এতেকাফ শেষে মুসল্লিদের কেউ তাকে হাদিয়া দেয়, তা হলে তা গ্রহণ করা জায়েজ হবে। এবং সে ক্ষেত্রে এটা ইবাদত বলে বিবেচিত হবে। কেননা, একজন পরহেজগার লোককে সম্মানিত করা বা সহযোগিতা করা)তবে এতেকাফের মতো এমন একটি জরুরি ও ফজিলতপূর্ণ সুন্নত আদায়ের জন্য লোক না পাওয়া বড়ই দুর্ভাগ্যজনক। এতে প্রতিটি মুসলমানের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কাম্য।
সূত্র: হেদায়া, ফাতহুল কাদির ২/৩০৪; রদ্দুল মুহতার ২/৪৪২; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬৭; ইলাউস সুনান ১৬/১৭২-৭৩; রদ্দুল মুহতার ৬/৫৫