গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জে সেনাসদস্যের ওপর হামলা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩২০০ জনকে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ১০ বেঙ্গল রেজিমেন্টের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাকসুদুল আলম সদর থানায় এই মামলাটি দায়ের করেন। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ১০ আগস্ট বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এ সময় তারা দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন, যা মহাসড়কের দুই পাশে যানজট সৃষ্টি করে।
সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তাদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে সেনাসদস্যদের ওপর আক্রমণ চালায়। এতে ৪ জন সেনা কর্মকর্তা সহ ৯ জন আহত হন। হামলাকারীরা সেনাবাহিনীর দুটি রাইফেল, ছয়টি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নেয় এবং একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, দুটি গাড়িতে ভাঙচুর করে। পরে সেনাবাহিনী দুটি অস্ত্র ও তিনটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বেআইনি জনতা মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য সেনাসদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে। এছাড়া সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম, গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী টুকু, সাবেক চেয়ারম্যান লাচ্চু শরীফ এবং তাঁর দুই ভাই কিচলু শরীফ ও পলাশ শরীফ, শুকতাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রানা মোল্লা, সাবেক চেয়ারম্যান আবেদ শেখ, জালালাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুপারুল আলম ও হেমায়েত হিমু।
সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলাটির তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।