এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ,পাইকগাছা (খুলনা)
উপকূলে লবণাক্ততার কারণে অনাবাদী জমিকে আবাদযোগ্য করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ। তিনি সংসদকে জানান, লবণাক্ততার কারণে যে সকল জমি অনাবাদী রয়েছে তা আবাদের আওতায় আনতে অবৈধ লবণ পানির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে। সরকারি খাল ইজারামুক্ত ও ভরাট হওয়া খাল খনন করে মিষ্টি সেচ পানির আধার সৃষ্টি করতে হবে। স্থায়ী বেড়িবাঁধের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে মিনি পুকুর ও বোরোপিট খনন করতে হবে। লবণাক্ত সহনশীল জাতের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
রোববার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে খুলনা-৬ আসন থেকে নির্বাচিত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস শহীদ এর নিকট এ সক্রান্ত লিখিত প্রশ্ন উত্থাপন করেন। এমপি রশীদুজ্জামান বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা খুলনা জেলার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা একদা খাদ্য উদ্বৃত্ত এলাকা হিসাবে প্রসিদ্ধ ছিলো। লবণাক্ততার কারণে যেই সকল জমি অনাবাদী রহিয়াছে। উক্ত জমি আবাদযোগ্য করিবার কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা?’ তা কৃষিমন্ত্রী মহোদয়ের কাছে অনুগ্রহ করিয়া জানতে চান।
লিখিত জবাবে কৃষিমন্ত্রী আরো জানান, খুলনা জেলার কয়রা উপজেলায় মোট আবাদযোগ্য জমি ১৭ হাজার ২৭৪ হেক্টর, লবণাক্ততার সমস্যা সাধারণত রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে পরিলক্ষিত হয়। এ মৌসুমে ৭ হাজার ২৮৮ হেক্টর ও ১৬ হাজার ৪৯ হেক্টর জমি পতিত থাকে। অনুরূপভাবে পাইকগাছা উপজেলায় মোট আবাদী জমির পরিমাণ ২৪ হাজার ৯১৮ হেক্টর। এরমধ্যে লবণাক্ততা রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টর জমি। যেখানে রবি মৌসুমে মৎস্য চাষ হয়। উক্ত জমি ফসলের আওতায় আনা সম্ভব। লবণাক্ত ঘেরগুলো পরিকল্পিত ভাবে মিষ্টি পানির আওতায় আনা গেলে স্বাদু পানির মাছ এবং ফসল, একই সাথে উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রী আব্দুস শহীদ জানান, সরকারের প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ক্ষেত্রে ওই সকল জমিগুলো ফসলের আওতায় আনতে যে সকল প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলি হলো: মিষ্টি পানির অভাব, খাল ভরাট হয়ে যাওয়া, ¯øুইচ গেট বিনষ্ট, ফসলি জমিতে লবণ পানি উঠানো। এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে ফসল আবাদের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরো জানান, কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায় অনাবাদী জমি আবাদযোগ্য করার লক্ষ্যে ‘উপকূলীয় এলাকায় পানি ও মাটির লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন ও নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে বর্ণিত এলাকায় খাল ও পুকুর পুনঃখনন, সেচ অবকাঠামো স্থাপনের মাধ্যমে অনাবাদী জমি আবাদযোগ্য করা সম্ভব হবে।
একই প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, লবণাক্ততার কারণে অনাবাদী জমি আবাদযোগ্য করার লক্ষ্যে বিএডিসি’র মাধ্যমে ২০২৩-২৪ বর্ষে খুলনা জেলার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫৩১ দশমিক ৫ মেট্রিকটন বীজ এবং কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সার সরবরাহ করা হয়েছে। এছাড়া বিএডিসিসহ কয়েকটি সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘পার্টনার’ প্রকল্প হতে কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায় ফসল ও সেচ উভয় সেক্টরে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।