মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের গুয়াতলায় সন্ত্রাসীদের হাতে নৃশংসভাবে খুনের শিকার মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী আ. হাকিম জোমাদ্দার (৬০) হত্যা মামলার আসামিদের দ্রæত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকার শতশত জনগণ।
শনিবার সকাল ১০টায় নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের পলিটিক্স বাজার মোড়ে ব্যানার, পোষ্টার ও প্লাকাট হাতে নিয়ে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশগ্রহন করে এলাকার পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ ।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফফার খান, সমাজকর্মী আবুল কালাম খান, নিহত আ. হাকিম জমাদ্দারের স্ত্রী জামিলা বেগম, ছেলে মেহেদী হাসান, ভাই হারুন জোমাদ্দার, মেয়ে আসমা জোমাদ্দার, ভাইপো আল-আমীন জোমাদ্দার, ভাইয়ের স্ত্রী সালমা বেগম প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা ব্যবসায়ী আ. হাকিম জোমাদ্দার হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরর ৯ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ মামলার মূল আসামিদের গ্রেফতার করতে না পাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্ধ্বতন প্রশাসনের প্রতি অতি দ্রæত আসামিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।
মানববন্ধনে নিহত আ. হাকিম জোমাদ্দারের ছেলে মেহেদী হাসান অভিযোগ করে বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে হত্যা করে প্রকাশ্যে উল্লাস করেছে সন্ত্রাসীরা। প্রশাসনের আধুনিক প্রযুক্তি থাকা স্বত্বেও ঘটনার ৯দিন অতিবাহিত হলেও মূল আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি থানা পুলিশ। এর পেছনে কি রহস্য আছে, কারণ কোথায় এলাকাবাসী জানতে চায়। এদিকে মূল আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে উপজেলা নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের গুয়াতলা গ্রামে জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী আ. হাকিম জোমাদ্দারের(৬০) ওপর হামলা চালায় প্রতিবেশী মোজাম্মেল হাওলাদার, শহিদ হাওলাদার ও কবির হাওলাদারের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসী দল। হামলাকারী সন্ত্রাসীরা দেশীয় ধারালো অস্ত্র-স্বস্ত্র নিয়ে আ. হাকিম জোমাদ্দারের বাড়িতে ঢুকে তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় আ. হাকিম জোমাদ্দারের পরিবারের লোকজন তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে।
আহতদের ডাক-চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথিমধ্যে হোগলপাতি জনৈক শহিদুল শেখের দোকানের সামনে পৌছলে সন্ত্রাসীরা পূনরায় ২য় দফায় তাদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদেরকে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় পুলিশের হট লাইনে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আ. হাকিম জোমাদ্দারকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় আ. হাকিম জোমাদ্দারের ভাই হারুন জোমাদ্দার বাদী হয়ে ২৪ জন নামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৪/১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।