মোঃপারভেজ খাঁন ইমন
লবনচরা (খুলনা) প্রতিনিধি,
চেয়ারম্যান,প্যানেল চেয়ারম্যান,সদস্যবৃন্দ,কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ সহ আজ সকালে বারবার নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ রায়হান ফরিদ এর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ
বাঙালি জাতির দীর্ঘ স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক অনন্য দিন আজ।
সারা বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনা পাওয়ার প্রতীক্ষায় উদগ্রীব সেদিন। সবার দৃষ্টি রেসকোর্সের দিকে। মনে প্রশ্ন, ‘কখন আসবে কবি?’
সফেদ পাজামা-পাঞ্জাবি আর হাতকাটা কালো কোট পরে দৃঢ়তার সঙ্গে হেঁটে এসে মঞ্চে উঠলেন দীর্ঘদেহী এক বাঙালি। সঙ্গে করে তিনি নিয়ে এসেছেন সাড়ে সাত কোটি বাঙালির ভবিষ্যৎ, আত্মসম্মান ও অধিকার আদায়ের মন্ত্র। পুরো জাতি তার কথা শোনার প্রতীক্ষায় উদগ্রীব। সেই ভাষণ শুনতে ঢাকার প্রতিটি বাড়ির প্রতিটি ছেলে এসে উপস্থিত রেসকোর্স ময়দানে। শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে বসে ছিল সেই ভাষণের প্রতীক্ষায়। বঙ্গবন্ধুর সেদিনের সেই ভাষণ শুধু বাংলার নয়, পৃথিবী জুড়ে মানবমুক্তির আন্দোলনের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী উদাহরণ। আর বঙ্গবন্ধু মানুষের মুক্তির আন্দোলনের পথে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হন। স্বাধীন বাংলাদেশে তিনিই হয়ে ওঠেন জাতির জনক।
এ দিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এই মহান নেতা ঘোষণা করেন—‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।’ একাত্তরের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা। এর পরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা এক ও অবিচ্ছেদ্য বিষয়। স্বাধীনতার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর কাছে কোনো আকস্মিক বিষয় ছিল না, বরং ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অনিবার্য জাতীয় স্বাধীনতার দিকে তিনি বাংলার জনগণকে প্রস্তুত করেছিলেন। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’—এই ঐতিহাসিক ঘোষণার মধ্যে যেমন দেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতার কথা অন্তর্ভুক্ত ছিল, তেমনি মানুষের সার্বিক মুক্তি ও কল্যাণের আকাঙ্ক্ষাও ধারণ করেছে ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাত্তরের ৭ই মার্চ দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণ পরবর্তীকালে স্বাধীনতার সংগ্রামের বীজমন্ত্র হয়ে পড়ে। একইভাবে এ ভাষণ শুধু রাজনৈতিক দলিলই নয়, জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় বিধানের একটি সম্ভাবনাও তৈরি করে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিকবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।